বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের পরিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে দেখা করেছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) চিফ অ্যাডভাইজার গোব ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ভাইয়েরা তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে ‘সালাম’ ও শুভকামনার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন, বলেছিলেন যে অধ্যাপক ইউনূস যখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ এবং অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা বলেছিলেন তখন তারা কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, আমরা সম্মানিত ছিলাম যে আপনি বিপ্লবে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছেন এবং আপনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার এক দিন পর রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দিলে দুই ভাই অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি করেন।
আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে যখন আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদের গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানায় তখন আমাদের কেমন লেগেছিল তা আমি বলতে পারব না।
বৈঠকে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে বলেন, তারা হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
ভাইরা বলেছিল যে তারা তাদের নিহত ভাইয়ের নামে একটি ফাউন্ডেশন স্থাপন করবে। তারা বলেছে যে তারা তাদের নিহত ভাইয়ের স্মরণে তাদের গ্রামে একটি ‘মডেল মসজিদ’ এবং একটি মেডিকেল কলেজ তৈরি করতে চায় এবং তারা এই বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে।
ফাউন্ডেশন দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের শিকারদের জন্য কাজ করবে, আবু হোসেন বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে তার হত্যার তদন্ত দ্রুত করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, শহীদ আবু সাঈদ এবং তিনি জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল। তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক একদিন পর গত ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতও করেন।
এমএএন
মন্তব্য করুন: