রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার পেছনে উঠে এসেছে অন্য তথ্য। চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারির একটি দোকানে কারা ব্যবসা করবে এবং সেই দোকানের লেনদেন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বেই এ হত্যাকাণ্ড বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। লালবাগের ডিসি বলেন, হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্রেফতার হওয়া মাহিন মামলার এক নম্বর আসামি।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি জসীম উদ্দিন বলেন, ভাঙারি ব্যবসা এবং দোকানে কারা ব্যবসা করবে, তা নিয়ে একটি দ্বন্দ্ব চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগ এবং যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তারা সম্পর্কিত। তারা একসঙ্গে কিছুদিন ব্যবসা করেছেন। যখন ব্যবসার লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তখনই তারা বিবাদে লিপ্ত হন। এর ফলেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লালবাগ বিভাগের ডিসি বলেন, গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ১০ জুলাই নিহত সোহাগের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
পুলিশ গত ১১ জুলাই ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত তারেক রহমান রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব কর্তৃক আলমগীর (২৮) ও মনির ওরফে ছোট মনির (২৫) নামের আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া, শুক্রবার রাতে মো. টিটন গাজী (৩২) নামে আরও এক এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
লালবাগ বিভাগের ডিসি আরও বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন, সংশ্লিষ্ট সকল অপরাধীকে গ্রেফতার এবং সোহাগ কেন এই ঘটনার শিকার হলেন তা উদ্ঘাটনের জন্য একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এমএএন
মন্তব্য করুন: