[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
২৩ মাঘ ১৪৩১

সিভিল সার্ভিসে ‍‘ক্যাডার’ শব্দ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৪
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:১২

সংগৃহীত ছবি

সিভিল সার্ভিসে “ক্যাডার” শব্দটি বাদ দিতে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। “ক্যাডার” শব্দটি নেতিবাচক হওয়ায় কমিশন এ সুপারিশ করবে।

আজ রবিবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সচিব বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে নানা কারণে মনে করা হয় ক্যাডার। ক্যাডার শব্দটার সঙ্গে একটা নেগেটিভিটি থাকে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের যে অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব দেব এর মধ্যে একটা থাকবে ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে যার যে সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস প্রশাসন, সিভিল সার্ভিস হেলথ, সিভিল সার্ভিস এগ্রিকালচার-এভাবে লেখা হবে। এটা একটা বড় সংস্কার বলে আমি মনে করি, এতে অনেকের স্যাটিসফেকশন আসবে।

তিনি বলেন,আমরা ট্যুর করতে গিয়ে দেখলাম মানুষ মনের কথা বলতে চেয়েছে। কয়েকটা অফিস সম্পর্কে মানুষের একেবারেই নেগেটিভ ধারণা। এগুলো আপনারা জানেন, আমিও জানি, উল্লেখ করতে চাই না। তারপরও দু-একটার কথা বলতে হয়। এসিল্যান্ড অফিস সম্পর্কে বাজে ধারণা, রেজিস্ট্রি অফিস সম্পর্কে খুবই বাজে ধারণা।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়, সেই পরিবর্তনের জন্যই এই পরিবর্তিত সরকার এসেছে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি। ইতিমধ্যে এক লাখ মানুষ অনলাইনে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক নাম পরিবর্তন হবে কি না, এ প্রশ্নে মোখলেস উর রহমান বলেন, অনেকে বলেছেন জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কি না। জেলা প্রশাসক ব্রিটিশ আমলের সৃষ্টি এবং এই শব্দের বাইরে অনেকগুলো প্রতিশব্দ আছে; কালেক্টর আছে, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আছে, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আছে। আমরা নামের বিকল্প সাজেশন দেব, সরকার যেটা নেয়। সরকার সেটাই নেবে যেটা আপনারা চান।

আমলাদের ওপর আমলারাই সব থেকে বেশি জুলুম করে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আমরা বলি-কাক কাকের মাংস খায় না। তবে আমলাদের ওপর সবচেয়ে বেশি জুলুম আমলারাই করে।

জনপ্রশাসনের কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে একদিনে পরিবর্তন আনা সম্ভব না, আমরা সুপারিশ দেব।

জনপ্রশাসন সচিব বলেন, গত ৫২ বছরে ২৩টি সংস্কার কমিশন হয়েছে। সরকার কতটুকু সুপারিশ নিয়েছে আমি, আপনি, আমরা ভালোই জানি। এবার আমরা বি প্র্যাকটিক্যাল, মানুষের কাছে গিয়ে যতটুকু গ্রহণযোগ্য সেটা দেওয়ার চেষ্টা করব।

যারা পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদের কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম জানিয়ে সচিব বলেন, এ বিষয়গুলো চিহ্নিত করে এসব লোকজনকে আমরা মেইন স্ট্রিম থেকে সরিয়ে দেব।

কমিশন প্রধান জানান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ঢাকার বাইরে সাধারণ মানুষের বক্তব্য শুনবে। রাজশাহীতে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা এবং গণশুনানি করা হয়েছে। নাটোরেও মিটিং হয়েছে।

মুরিদ চৌধুরী বলেন, গণশুনানিতে মানুষ একটা সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সে সন্তুষ্ট কি না? ব্যাপকসংখ্যক লোক বলেছেন সন্তুষ্ট না। তারা যে সন্তুষ্ট না, সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে। সন্তুষ্ট নয় বলেই তো সরকার পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের অগ্রাধিকারটা আমরা বোঝার চেষ্টা করছি।

এমএএন

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর